প্রথম টেস্টে অস্ট্রেলিয়ার কাছে বড় ব্যবধানে হারল ইংল্যান্ড


- অনলাইন ডেস্ক
- ০৬ আগস্ট ২০১৯, ০২:১৯
অ্যাশেজ সিরিজের সূচনা ম্যাচের সূচনার দিনে যেখানে ব্যাট ফুটে ছিল সফরকারিরা। এমনকি প্রথম দিনের পর দ্বিতীয় ও তৃতীয় দিনও ছিল ব্যাকফুটে। সেখানে তারাই কিনা টেস্ট জিতে নেয় তাও ২৫১ রানের বড় ব্যবধানে। আবার খেলার যবনিকা টেনে দেয় পঞ্চম দিনের এক সেশনেরও বেশি সময় বাকি থাকতে। প্রথম ইনিংসে ৯০ রানের লিড নেয়া ইংল্যান্ডের দ্বিতীয় ইনিংস গুটিয়ে মাত্র ১৪৬ রানে। অস্ট্রেলিা প্রথম ইনিংসে একব পর্যায়ে ১২২ রানে ৮ উইকেট হারিয়ে পরে ২৮৪ রান করলেও দ্বিতীয় ইনিংসে ৭ উইকেটে ৪৮৭ রান করে ৯০ রানের ঘাটতি পুষিয়ে ইংল্যান্ডকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছিল ৩৯৭ রানের লিড নিয়ে।
টেস্টের প্রথম দুই দিন ছিল ইংল্যান্ডে রাজত্ব। তৃতীয় দিনও ছিল তাদের প্রাধান্য বেশি। এদিন অস্ট্রেলিয়া টেস্টে ফিরে আসার চেষ্টা করেছিল। ৯০ রানে পিছিয়ে থেকে দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে দিন শেষে করেছিল ৩ উইকেটে ১২৪ রান। এগিয়ে ছিল ৩৪ রানে। কিন্তু চতুর্থ দিন গিয়ে তারা পুরো নেতৃত্ব নিয়ে নেয়। বল টেম্পারিংয়ের নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে প্রত্যাবর্তন টেস্টের প্রথম ইনিংসে একাই লড়াই করে ১৪৪ রানের ইনিংস খেলেছিলেন ম্যাচ সেরা স্মিথ। সেই স্মিথ দ্বিতীয় ইনিংসেও জ্বলে উঠেছিলেন ১৪২ রানের আরেকটি ইনিংস খেলে। সঙ্গে ছিল ওয়েডেরও ১১০ রানের ইনিংস। এর ফলে অস্ট্রেলিয়া নিজেদের ঘাটতি পুষিয়ে ৭ উইকেটে ৭ উইকেটে ৪৮৭ রান করে ৩৯৭ রানে এগিয়ে থেকে ইনিংস ঘোষণা করার মতো সাহস দেখায়। প্রথম ইনিংসে ছড়ি ঘুরানো ইংরেজ পেসারা দ্বিতীয় ইনিংসে খেই হারিয়ে ফেলেন। সেই সঙ্গে যেন দলও হারিয়ে ফেলে খেই।
এজবাস্টনে যে অবস্থানে থেকে অজিরা ইনিংস ঘোষণা করেছিল তাতে করে তারা ম্যাচ জিততে না পারলেও হারের সম্ভাবনা ছিল না। কারণ ইংল্যান্ডের হাতে সময় ছিল শেষ দিন ছাড়া চতুর্থ দিনের ৭ ওভার। ৯৭ ওভারে ৩৯৮ রান করে জেতা তাও আবার পঞ্চম দিন, ইংল্যান্ডের জন্য সমীকরণ কঠিন হয়ে পড়ে। কিন্তু জিততে না পারলেও শক্তিশালী ব্যাটিং লাইনের কারণে ড্রয়ের সম্ভাবনাই ছিল বেশি। আবার যদি উইকেটে ব্যাটসম্যানরা দাঁড়িয়ে যান তা হলে অসম্ভবও ছিল না। ভাবনাবিদদের রাজ্যে এমনই ছিল চিন্তা। চতুর্থ দিনের বাকি সময় কোনো উইকেট না হারিয়ে ১৩ রান করায় হারের পাল্লাটা ছিল নেহাতই হালকা। কিন্তু সেখানে ঘটে উল্টো ঘটনা। ইংল্যান্ডের ব্যাটসম্যানরা কচু পাতার পানিতে পরিণত হলে উইকেটেই দাঁড়ানো কঠিন হয়ে পড়ে। তাদের কাছে সাক্ষাৎ যম হয়ে ওঠেন স্পিনার নাথান লায়ন। সঙ্গে ছিলেন পেসার কামিন্স। এই দুজনেই ১০ উইকেট ভাগাভগি করে নেন। লিয়ন নেন রানে ৬টি, কামিন্স ৩২ রানে নেন ৪টি উইকেট। লিয়নের এটি ছিল ক্যারিয়ারে ১৫তম বার ইনিংসে ৫ বা ততোধিক উইকেট নেয়ার কীর্তি।
কামিন্স শুরুতে অভিষেকে প্রথম ইনিংসে সেঞ্চুরি করা কামিন্সকে মাত্র ১১ রানে আউট করে কামিন্স আঘাত হেনে উইকেট নেয়ার পথ দেখানোর পর লিয়ন মেতে ওঠেন উইকেট পাওয়ার উল্লাসে। তার ঘূর্ণিতে বেসামাল ইংরেজরা লাঞ্চের আগেই চার উইকেট হারালে তাদের পক্ষে ম্যাচ বাঁচানোই কঠিন হয়ে পড়ে। একে একে তিনি ফিরিয়ে দেন জেসন রয় ২৮, দলপতি জো রুট ২৮ ও ডেনলিকে ১১ রানে। লাঞ্চের পর আবারো কামিন্সেন আঘাত। এবার জোড়া আঘাতে ফিরে যান বাটলার ১ ও বেয়ারস্টো ৬ রানে। এরপর লিয়ন যথারীতি শুরু করেন উইকেট নেয়ার মিছিল। একে একে তিনি ফিরিয়ে দেন বেন স্টোকসকে ৬ মঈন আলীকে ৪ ও ক্রিস ব্রডকে ০ রানে। বিপর্যয়ের সময় ক্রিস ওকস চেষ্টা করেছিলেন প্রতিরোধ গড়তে। কিন্তু তার এই প্রতিরোধ শুধুই অস্ট্রেলিয়ার জয়কে বিলম্বিত করে আর ইংল্যান্ডের হারের ব্যবধান কমিয়ে আনে।
মানবকণ্ঠ/টিএইচ
