আইএমএফের সংস্কারগুলো বাস্তবায়ন চ্যালেঞ্জের হবে

- অনলাইন ডেস্ক
- ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ১৫:৪৬
রেজাউল করিম খোকন: আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) থেকে ৪৫০ কোটি মার্কিন ডলার ঋণ পেতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশ যেভাবে চেয়েছিল, সেভাবেই আইএমএফের ঋণ পেতে যাচ্ছে। অনেকের অনুমান ছিল, বাংলাদেশ এবার আইএমএফের ঋণ পাবে না কিংবা তারা কঠিন শর্ত দেবে। তেমন কিছুই হয়নি। তবে তারা শর্ত দিয়েছে। রাজস্ব আয় বৃদ্ধির জন্য আইএমএফের কিছু পরামর্শ আছে। সরকারও সেভাবে কাজ করছে। সাত কিস্তিতে এই ঋণ দেবে তারা। প্রথম কিস্তির ঋণ মিলছে ফেব্রুয়ারিতেই। আর সর্বশেষ কিস্তির ঋণ পাওয়া যাবে ২০২৬ সালের ডিসেম্বরে। আইএমএফের ঋণের সুদহার হবে বাজারদর অনুযায়ী। তাতে গড় সুদহার হবে ২ দশমিক ২ শতাংশ। এ ঋণের উদ্দেশ্য বাংলাদেশের সামষ্টিক অর্থনীতিকে স্থিতিশীল রাখা এবং অসুবিধাগ্রস্ত মানুষকে রক্ষা করে শক্তিশালী, অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং সবুজ অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে সহায়তা করা। ৪২ মাস ধরে বিভিন্ন কিস্তিতে এ ঋণ দেওয়া হবে। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএএফ) কাছ থেকে সাড়ে চার বিলিয়ন বা ৪৫০ কোটি মার্কিন ডলার ঋণ নিতে বাংলাদেশকে কিছু বিষয়ে সংস্কার করতে হবে। সরকারের এসব পদক্ষেপ বৈদেশিক লেনদেনের ভারসাম্য পরিস্থিতির উন্নতি ঘটাবে, অর্থনীতিতে ঝুঁকির মাত্রা কমাবে এবং অতি প্রয়োজনীয় সামাজিক, উন্নয়ন এবং জলবায়ু ব্যয় মেটানোর মাধ্যমে অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধিতে সহায়ক হবে। আইএমএফের সঙ্গে ঋণ কর্মসূচির ক্ষেত্রে প্রধান পাঁচটি বিষয়ে সংস্কারে সম্মত হয়েছে সরকার। এগুলো হলো- বাড়তি আর্থিক সংস্থানের জায়গা তৈরি করা, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ ও মুদ্রানীতি কাঠামোর আধুনিকায়ন, আর্থিক খাত শক্তিশালীকরণ, প্রবৃদ্ধির সম্ভাবনা ত্বরান্বিত করা এবং জলবায়ু সহনশীলতা গড়ে তোলা।
এতে বলা হয়েছে, বাড়তি আর্থিক সংস্থানের জন্য উচ্চ রাজস্ব আহরণ এবং ব্যয় যৌক্তিকীকরণ করা হবে, যা প্রবৃদ্ধি-সহায়ক খরচ বাড়াতে সহায়ক হবে। অসুবিধাগ্রস্ত মানুষের ওপর প্রভাব মোকাবিলায় উচ্চ সামাজিক ব্যয় করা হবে এবং সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচি অধিকতর লক্ষ্যনির্দিষ্ট হবে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুদ্রানীতি মূল্যস্ফীতির দিকেই দৃষ্টি দিয়ে বাস্তবায়িত হবে। মুদ্রার বিনিময় হার অধিকতর উন্মু ক্ত করলে বহিস্থ অভিঘাত মোকাবিলায় সহায়ক হবে, মনে করেছে আইএমএফ। এছাড়া আর্থিক খাতের দুর্বলতা কমাতে তদারকি, সুশাসন এবং রেগুলেটরি কাঠামো জোরদার করা হবে। ব্যবসা ও বিনিয়োগের জন্য সহায়ক পরিবেশের উন্নতি করা হবে। জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় বড় ধরনের বিনিয়োগ এবং বাড়তি অর্থায়ন জোগাড় করা হবে।
পরের কিস্তিগুলো পেতে হলে সংস্থাটির দেওয়া শর্ত পূরণ করতে হবে বাংলাদেশ সরকারকে। শর্তের মধ্যে অন্যতম আর্থিক খাতের সংস্কার। এর মধ্যে রয়েছে ব্যাংক খাত ও রাজস্ব খাত। সম্ভাব্য শর্তগুলো পূরণ না করলে কিস্তির অর্থ দিতে দেরি, এমনকি আটকেও দিতে পারে আইএমএফ। নিজের দেশের লোকেরা এত দিন সংস্কারের কথা বলে এলেও সরকার তা কানে নেয়নি। আইএমএফের কথা শুনে এখন সংস্কারে মনোযোগ দেবে। ভালো হলো যে এখন অন্য উন্নয়ন সহযোগী সংস্থাগুলোকে বাংলাদেশের জন্য ঋণ অনুমোদন করতে তেমন সমীক্ষা করতে হবে না।
কারণ, মৌলিক কাজগুলো আইএমএফ করে দিচ্ছে। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সামষ্টিক অর্থনীতির যে স্থিতিশীলতা নষ্ট হচ্ছে, তা মোকাবিলায় অর্থ দিচ্ছে আইএমএফ। এ অর্থ অপচয় করা যাবে না। করলে ঋণটা বোঝা হয়ে যাবে। আর আর্থিক খাত সংস্কারে শুধু বাংলাদেশ ব্যাংক নয়, অন্য সংস্থাগুলোকেও ভ‚মিকা পালন করতে হবে। সমন্বিত পদক্ষেপ ছাড়া সংস্কার অসম্ভব। প্রতিটি কিস্তি দেওয়ার আগে আইএমএফের একটি মিশন আসবে ঢাকায়। এটাই তাদের নিয়ম। কিস্তি ছাড়ের আগে সফরে এসে তারা দেখবে শর্তগুলো ঠিকঠাকভাবে পূরণ হচ্ছে কিনা। শর্ত পূরণ না হলে তখন পরের কিস্তির অর্থ আটকেও দিতে পারে আইএমএফ। তাদের শর্ত পূরণ সরকারের জন্য তেমন কঠিন হবে না। কারণ, ব্যাংক ও আর্থিক খাতে নতুন আইন প্রণয়ন ও বিদ্যমান আইন সংশোধনের কিছু কাজ এমনিতেই করা হচ্ছে। মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) তুলনায় রাজস্ব সংগ্রহের হার যে কম, তা অস্বীকার করার কিছু নেই। আইএমএফ তাগিদ দিচ্ছে রাজস্ব-জিডিপি হার বাড়াতে। সরকার নিজেও তা চায় এবং এ জন্য কাজও চলছে। রাজস্ব সংগ্রহ বৃদ্ধির জন্য সরকার ইতোমধ্যে বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে।
রাজস্ব খাতে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) শর্ত পূরণ করতে আগামী তিন অর্থবছরে বাংলাদেশকে রাজস্ব হিসেবে ২ লাখ ৩৪ হাজার কোটি টাকা আয় করতে হবে। এর মধ্যে আগামী ২০২৩-২৪ অর্থবছরেই আদায় বাড়াতে হবে ৬৫ হাজার কোটি টাকা। বাংলাদেশ আইএমএফের কাছ থেকে ৪৭০ কোটি ডলার ঋণ পাচ্ছে। এই ঋণ বাংলাদেশ পাবে সাত কিস্তিতে তিন বছরে। এ ক্ষেত্রে সংস্থাটির শর্তই হচ্ছে কর-জিডিপির অনুপাতে প্রতিবছরই সরকারকে রাজস্ব আয় বাড়াতে হবে। রাজস্ব আয় বাড়াতে আইএমএফের পক্ষ থেকে এখনো সুস্পষ্ট দিকনির্দেশনা না পাওয়া গেলেও বাজেটের আগে ধাপে ধাপে নির্দেশনাগুলো আসবে। তবে শুধু আইএমএফের চাপে এসব সংস্কার না করে বরং নিজেদের সক্ষমতা বাড়াতেই এই সংস্কার হওয়া প্রয়োজন বলে মনে করে প্রতিষ্ঠানটি।
তা ছাড়া আইএমএফ যে শর্ত দিয়েছে, তা কঠোর কিছু নয়। সুতরাং এ লক্ষ্য অর্জন সম্ভব।রাজস্ব খাতের ক্ষেত্রে আইএমএফের সংস্কারগুলো বাস্তবায়ন অসম্ভব নয়। এ জন্য সরকারের সদিচ্ছার পাশাপাশি রাজনৈতিক-অর্থনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গিও বদলাতে হবে। তবে সব ছাপিয়ে কর-জিডিপির অনুপাতে রাজস্ব আয় বাড়ানোর বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হওয়া উচিত। আইএমএফ ২০২৩-২৪ অর্থবছরে দেশে কর-জিডিপির অনুপাত দশমিক ৫ শতাংশ বাড়িয়ে ৮ দশমিক ৩ করার শর্ত দিয়েছে। এই শর্ত পূরণ করতে গেলে বর্তমানে আমাদের যে রাজস্ব আয় আছে, তার থেকে প্রায় ৬৫ হাজার কোটি টাকা অতিরিক্ত আয় করতে হবে। এরপরের অর্থবছর অর্থাৎ ২০২৪-২৫ অর্থবছরের শেষে কর-জিডিপির অনুপাত হবে ৮ দশমিক ৮ শতাংশ। তাতে বর্তমান রাজস্ব আয় থেকে ২০২৪-২৫ অর্থবছরে অতিরিক্ত রাজস্ব আয় করতে হবে ৭৩ হাজার কোটি টাকার ওপরে। আর আইএমএফের ঋণ কর্মসূচির সর্বশেষ বছর অর্থাৎ ২০২৫-২৬ অর্থবছরে কর-জিডিপির অনুপাতের লক্ষ্যমাত্রা হচ্ছে ৯ দশমিক ৫ শতাংশ। এই অর্থবছরে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) বর্তমান আয়ের তুলনায় অতিরিক্ত আরও ৯৬ হাজার কোটি টাকা আয় করতে হবে। সব মিলিয়ে আগামী তিন অর্থবছর শেষে ২ লাখ ৩৪ হাজার কোটি টাকার বাড়তি রাজস্ব আদায় করতে হবে। চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরে এনবিআরকে ৩ লাখ ৭০ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব আয়ের লক্ষ্য দেওয়া হয়েছে, যা আগের অর্থবছরের চেয়ে ৪০ হাজার কোটি টাকা বেশি। আগের অর্থবছরে সব মিলিয়ে ৩ লাখ ২ হাজার কোটি টাকার রাজস্ব আদায় করেছে এনবিআর। সুতরাং লক্ষ্য অর্জনে চলতি অর্থবছরে রাজস্ব আদায়ে প্রায় ২৩ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হতে হবে। এনবিআরের কাঠামোগত সংস্কার ও মানসিকতার বদল করা না গেলে আইএমএফের শর্ত মেনে রাজস্ব খাতের সংস্কার বাস্তবায়ন করা সরকারের জন্য কঠিন হবে। সুনির্দিষ্টভাবে আমাদের কাছে এখনো কোনো তথ্য নেই, কোন কোন খাত থেকে কর আসতে পারে। এগুলো স্বচ্ছ করতে হবে। তবে রাজস্ব বাড়ানোর জন্য কোন ‘সিলভার বুলেট’ নেই। সুতরাং কাঠামোগত সংস্কারের মাধ্যমে লক্ষ্যটা কীভাবে অর্জন করা যায়, তা নিয়ে আরও কাজ করতে হবে। মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) তুলনায় রাজস্ব আদায়ের দিক থেকে বাংলাদেশের অবস্থান সর্বনিম্ন দেশগুলোর একটি। এর ফলে বাংলাদেশ শিক্ষা, স্বাস্থ্যসহ সামাজিক খাতে পর্যাপ্ত বরাদ্দ রাখতে পারছে না। দেশে এখন স্বাস্থ্য খাতে ব্যয় জিডিপির ১ শতাংশের কম। অর্থাৎ আন্তর্জাতিক মান হচ্ছে ৩ থেকে ৫ শতাংশ। আর শিক্ষা খাতে ব্যয় জিডিপির প্রায় ২ শতাংশ, যা ইউনেসকোর ঠিক করা লক্ষ্যের অর্ধেক।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের পক্ষে কি অতিরিক্ত এই রাজস্ব আয় সম্ভব ? এটা অসম্ভব মনে হয়না। আর সে ক্ষেত্রে আইএমএফ বাস্তবতার আলোকেই বলছে। তবে এটা অর্জন করতে হলে দরকার আন্তরিকতার। সেই সঙ্গে দক্ষতা ও জনবল নিয়োগের বিষয়টিও মাথায় রাখতে হবে। ছিদ্রগুলো বন্ধ করতে হবে। এনবিআরের ভাবমূর্তি বাড়াতে হবে। এনবিআরের হিসাব অনুযায়ী, দেশের মাত্র ১ দশমিক ১ শতাংশ আয়কর দেন। আর ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক আউটলুকের এক প্রতিবেদন বিশ্লেষণ করে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগই বলেছে, বিশ্বের উদীয়মান দেশ ও এশিয়ার উন্নয়নশীল দেশগুলোয় জিডিপির তুলনায় কর বা রাজস্ব সংগ্রহের হার বাংলাদেশের থেকে বেশ বেশি; অর্থাৎ ২৬ দশমিক ৭ শতাংশ। এমনকি সাব-সাহারা আফ্রিকার দেশগুলোর কর-জিডিপি হারও বাংলাদেশের চেয়ে বেশি; অর্থাৎ ১৭ দশমিক ৮ শতাংশ। আবার আইএমএফের এক প্রতিবেদনের তথ্য বিশ্লেষণ করে অর্থ বিভাগ বলেছে, কর-জিডিপির হারে নিকটতম প্রতিবেশী দেশগুলোর তুলনায়ও বাংলাদেশের অবস্থা খারাপ। যেমন নেপালের কর-জিডিপি অনুপাত ২৩ দশমিক ৩, ভারতের ২০ দশমিক ৩, পাকিস্তানের ১৫ দশমিক ২ এবং শ্রীলঙ্কার ১৩ দশমিক ৩ শতাংশ। সরকারি হিসাবে দেশে বর্তমানে কর-জিডিপি অনুপাত ৭ দশমিক ৮ শতাংশ। বাংলাদেশের রাজস্ব আয় অত্যন্ত কম। দেশের রাজস্ব আয় এখন মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) মাত্র ৯ দশমিক ৪ শতাংশ। আর প্রতিবছর সরকারের রাজস্ব আয়ের ২১ দশমিক ১ শতাংশ ব্যয় হয় ঋণের সুদ পরিশোধে। বিপুল অঙ্কের এ ঋণদায় মেটাতে সরকারকে ধারাবাহিকভাবে বাজেট ঘাটতির মধ্য দিয়ে যেতে হয়। আবার বাজেটের ঘাটতি মেটাতে সরকারকে আবারও ঋণ নিতে হয়। এভাবে ঋণ পরিশোধের চাপ সামলাতে হয় বলে জলবায়ু অর্থায়নে ধারাবাহিকভাবে পিছিয়ে থাকছে। বাজেট বিশ্লেষণ করে দেখা যাচ্ছে, ২০২১-২২ অর্থবছরে জলবায়ু অর্থায়নে বাজেটে বরাদ্দ ছিল জিডিপির মাত্র শূন্য দশমিক ৭ শতাংশ। আর এর আগের দুই অর্থবছরে বরাদ্দ ছিল শূন্য দশমিক ৬ শতাংশ।
রাজস্ব খাতে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) শর্ত পূরণ করতে আগামী ২০২৩-২৪ অর্থবছরে চলতি বছরের লক্ষ্যমাত্রার অতিরিক্ত ৬৫ হাজার কোটি টাকার রাজস্ব আয় করতে হবে। এর পরের বছরগুলোতে এই আয় আরও বাড়াতে হবে। রাজস্ব আয় বাড়াতে আইএমএফের পক্ষ থেকে এখনো সুস্পষ্ট দিকনির্দেশনা না পাওয়া গেলেও বাজেটের আগে ধাপে ধাপে তা আসবে। তবে আইএমএফের চাপে নয়; বরং নিজেদের সক্ষমতা বাড়াতেই এই সংস্কার করা প্রয়োজন।রাজস্ব খাতের ক্ষেত্রে আইএমএফের সংস্কারগুলো বাস্তবায়ন করা চ্যালেঞ্জের হবে। তবে এটা অসম্ভব নয়। এ জন্য সরকারের সদিচ্ছার পাশাপাশি রাজনৈতিক-অর্থনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গিও বদলাতে হবে। তবে সব ছাপিয়ে যে আলোচনা এখন প্রাধান্য পাবে, তা হচ্ছে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড বা এনবিআরকে বর্তমান লক্ষ্যমাত্রার অতিরিক্ত ৬৫০ বিলিয়ন বা ৬৫ হাজার কোটি টাকা আয় করতে হবে। এর পরের অর্থবছর, অর্থাৎ ২০২৫ সালের জুনে সমাপ্ত বছরে বর্তমান বছরের লক্ষ্যমাত্রা থেকে অতিরিক্ত রাজস্ব আয় করতে হবে ১ হাজার ৩৮৩ বিলিয়ন টাকা বা ১ লাখ ৩৮ হাজার ৩০০ কোটি কোটি টাকা। আইএমএমের ঋণ কর্মসূচির সর্বশেষ বছর, অর্থাৎ ২০২৫-২৬ অর্থবছরে এনবিআরকে বর্তমান লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় অতিরিক্ত আরও ২ হাজার ৩৪০ বিলিয়ন টাকা বা ২ লাখ ৩৪ হাজার কোটি টাকা আদায় করতে হবে। উল্লেখ্য, চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেটে এনবিআরকে ৩ লাখ ৭০ হাজার কোটি টাকার রাজস্ব আদায় করার লক্ষ্যমাত্রা দেওয়া হয়েছে। এনবিআরের কাঠামোগত সংস্কার ও মানসিকতার বদল করা না গেলে আইএমএফের শর্ত মেনে রাজস্ব খাতের সংস্কার বাস্তবায়ন করা সরকারের জন্য কঠিন হবে।
লেখক : অবসরপ্রাপ্ত ব্যাংকার, কলামিস্ট


