'স্ট্রাকচারাল ডিজাইন নেই ঢাকার অধিকাংশ ভবনের'


  • অনলাইন ডেস্ক
  • ২৪ মার্চ ২০২৩, ১৪:২৭

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বলেন, 'আসলে এগুলো করার কথা রাজউকের। কিন্তু রাজউক সেটা করেও না, করছেও না, করতে পারেও না। আল্টিমেটলি আমরা সবাই ঝুঁকিতে, অতি ঝুঁকিতে।'

'প্রতি বছর ঢাকা শহরে এক লাখের বেশি নতুন ভবন নির্মিত হয়। এর মধ্যে স্ট্রাকচারাল ডিজাইন পাস করা ভবনের সংখ্যা ১০ হাজারও হবে না। দেখতে ভালো হলেও এগুলো স্ট্রাকচারাল ডিজাইনের নয়। এসব সুপারভাইজ করার মতো লোকও নেই। থাকলেও কারো আগ্রহ নেই। '

বৃহস্পতিবার (২৩ মার্চ) এক কর্মশালায় এমন তথ্য জানান দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মিজানুর রহমান।

তিনি বলেন, 'এসব বললে সরকারেরই অন্য সংস্থার বদনাম হয়। আসলে এগুলো করার কথা রাজউকের। কিন্তু রাজউক সেটা করেও না, করছেও না, করতে পারেও না। আল্টিমেটলি আমরা সবাই ঝুঁকিতে, অতি ঝুঁকিতে আছি।'

মিজানুর রহমান বলেন, '১৮৯৭ সালে বাংলাদেশের আশপাশে ৮ মাত্রার ভূমিকম্প হয়েছিল। সে সময় মৃত্যুর সংখ্যা তুলনামূলকভাবে কম ছিল। কারণ তখন টিনের বাড়িই বেশি ছিল। টিনের নিচে পড়লে হয়তো কারো কাটাছেঁড়া হবে বা ফাটবে, কিন্তু মৃত্যুর ঝুঁকি কম। ১০০ বছর পর এই ধরনের ভূমিকম্প রিপিট হয়। সে হিসেবে ১২৫ বছর হয়ে গেছে। নতুন একটি ভূমিকম্প এখন আমাদের প্রকৃতিগতভাবে পাওনা। সেটি হলে আমাদের কী হবে সেটি ভেবে পাই না।'

তিনি বলেন, 'আসলে আমাদের ঝুঁকি নিরসনে কী করা উচিত দেরি না করে এখনই ভাবতে হবে, পরিকল্পনা নিতে হবে, যেসব ভবন ভূমিকম্প ঝুঁকিমুক্ত নয়, সেগুলো রেট্রোফিটিং করতে হবে। এক বছরে যদি লাখ পরিমাণ ভবন নির্মিত হয় তবে আপনি কতোগুলোতে রেট্রোফিটিং করাবেন? সব দোষ আমাকে দিয়েও বা লাভ কী?'

ডিজি বলেন, 'রমজানে ১৬/১৮ ঘণ্টা না খেয়ে থাকাটা দুর্যোগ মোকাবিলার জন্য বড় সহায়ক। কারণ সাভারের রানা প্লাজার মতো একটি ভবনের ধ্বংসস্তূপ সরাতে আমাদের এক মাসের বেশি সময় লেগেছে। সিদ্দিক বাজারের ভবন কীভাবে সরানো হবে, নাকি থাকবে, সরাতে হলে কীভাবে করা যাবে, ভেবেই পাচ্ছি না।'

তিনি বলেন, 'কোনো দুর্যোগ আসলে একা আসে না। তুরস্কে যেমন ভূমিকম্পের পর বন্যা হাজির। আমাদের ক্ষেত্রেও তাই। সুতরাং দুর্যোগ বিষয়ে আমাদের জনগণকে জানাতে হবে, সতর্ক করতে হবে। প্রযুক্তি জাতির জন্য উপযোগী করতে হবে। মোবাইল সিগন্যালিং সিস্টেম, বন্যা ও ভূমিকম্পের আর্লি অ্যালার্মিং সিস্টেম চালু করতে হবে।'

তিনি আরও বলেন, 'দুর্যোগের ঝুঁকি নিরসনে আমাদের সকলকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। প্রত্যেক ঘরে ঘরে ঝুঁকি নিরসনের জন্য প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম রাখতে হবে। প্রয়োজন প্রশিক্ষিত দল, একই সঙ্গে বাসা-বাড়িতে আগুনের এবং অন্যান্য ঝুঁকি বাড়ায় এমন সরঞ্জামের ব্যবহার কমাতে হবে।'

কর্মশালায় উপস্থিত ছিলেন ইউনাইটেড পারপাস বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর শ্রীরামাপ্পা গঞ্চিকারা, ইউনাইটেড পারপাস বাংলাদেশের দুর্যোগ ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা ও জরুরি সাড়াদান ইউনিটের প্রধান মাসুদ রানা। ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স ও প্রকৌশল বিভাগের চেয়ারম্যান সাদিয়া হামিদ কাজী।

মানবকণ্ঠ/এফআই


poisha bazar