হ্যাচারিতে কাঁকড়া চাষে নতুন পদ্ধতি উদ্ভাবন


  • বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি, দৈনিক মানবকণ্ঠ
  • ১৮ মার্চ ২০২৩, ২০:৪৬,  আপডেট: ১৮ মার্চ ২০২৩, ২০:৫৬

সম্পূরক খাদ্য ব্যবহার করে হ্যাচারিতে কাঁকড়ার পোনা উৎপাদনের পদ্ধতি উদ্ভাবন করেছেন নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (নোবিপ্রবি) ফিশারিজ এন্ড মেরিন সায়েন্স বিভাগ। এই পদ্ধতিতে কাঁকড়ার চাষ আরো লাভজনক হবে বলে জানান গবেষকরা।

মৎস্য অধিদপ্তরের সাসটেইনেবল কোস্টাল মেরিন প্রকল্পের অর্থায়নে প্রকল্পটি বাস্তবায়নে কাজ করেছে নোবিপ্রবির ফিশারিজ এন্ড মেরিন সায়েন্স বিভাগ। এই প্রকল্পের প্রধান গবেষক ফিশারিজ এন্ড মেরিন সায়েন্স বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড.আবদুল্লাহ আল মামুন।প্রকল্পের সহযোগী সংস্থা হিসেবে ছিলো চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি এন্ড এনিম্যাল সাইন্স বিশ্ববিদ্যালয়,গ্লোব এগ্রো লিমিটেড এবং ইরাওয়াব ট্রেডিং।

আজ(১৮ মার্চ) টেকনাফের মিনাবাজারে চাষী পর্যায়ে সরবরাহ কৃত কাঁকড়ার প্রথম আহরণ এবং মাঠ দিবস কর্মসূচি পালিত হয়। উক্ত অনুষ্ঠানে প্রধান গবেষক অধ্যাপক ড. আব্দুল্লাহ-আল মামুনের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মাহবুবুল হক এবং বিশেষ অতিথি ছিলেন জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. বদরুজ্জামান।

বর্তমানে বাংলাদেশের খুলনা এবং কক্সবাজারে শীলা কাঁকড়া চাষ করা হয়। বৈদেশিক চাহিদা বেশী হওয়ায় কাঁকড়া রপ্তানির মাধ্যমে প্রতিবছর ৩০-৪০ মিলিয়ন ডলার রপ্তানি আয় যোগ হচ্ছে৷ কিন্তু কাঁকড়ার চাষের জন্য চাষীর প্রকৃতির উপর সম্পূর্ণ রুপে নির্ভরশীল। তারা বিভিন্ন উপকূলীয় মোহনা এলাকা ও ম্যানগ্রোভ এলাকা থেকে কিশোর কাকড়া আহরণ করে তা মোটাতাজাকরণ করে থাকেন৷ এছাড়াও নরম খোলসের কাঁকড়ার চাষ ও চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ায় আহরণের মহোৎসব চলছে যা জীববৈচিত্র্যর জন্য হুমকি। বৈদেশিক চাহিদা বেশী হওয়ায় প্রকৃতি থেকে কিশোর কাঁকড়ার আহরণ দিন দিন বেড়ে চলেছে। ফলে কাঁকড়ার প্রাপ্যতা দিন দিন কমে যাচ্ছে এবং অন্যান্য জীববৈচিত্র্য হুমকির সম্মুখীন। অন্যদিকে কাঁকড়ার মোটাতাজা করণে চাষীরা বিভিন্ন ধরনের মাছ কাঁকড়ার খাবার হিসেবে ব্যবহার করে আসছেন, যা সম্পূরক ও নিয়ন্ত্রিত না এবং চাষীরা কাঙ্ক্ষিত বৃদ্ধিও পায় না৷

কাঁকড়ার চাষের এই সমস্যার সমাধানে সম্পূরক খাদ্য ব্যবহার করে হ্যাচারিতে উৎপাদিত কাঁকড়ার পোনা নার্সিং ও মোটাতাজাকরণের লক্ষ্যে প্রকল্পটি কক্সবাজার এবং সাতক্ষীরা জেলায় চলমান রয়েছে।উক্ত প্রকল্পের মাধ্যমে বেসরকারি হ্যাচারিতে কাঁকড়ার পোনা উৎপাদন করা হয়। প্রথম পর্যায়ে উৎপাদিত প্রায় ২০০০০ পোনা কক্সবাজারের ১৩ জন কাঁকড়া চাষীকে সরবরাহ করা হয়।এই পোনা নার্সিং ও চাষাবাদে নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় কতৃর্ক উদ্ভাবিত সম্পূরক খাদ্যও চাষীদের সরবরাহ করা হয়।

মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মাহবুবুল হক প্রকল্পের অগ্রতিতে সন্তোষ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, কাঁকড়া ব্লু ইকোনোমিতে, উপকূলীয় জনগোষ্ঠীর আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। তিনি গবেষকদের চাষীবান্ধব প্রযুক্তি উদ্ভাবনে জোর দেয়ার আহবান জানান।

প্রধান গবেষক নোবিপ্রবির ফিশারিজ এন্ড মেরিন সায়েন্স বিভাগের চেয়ারম্যান ড. মামুন বলেন, হ্যাচারীর পোনা ও সম্পূরক খাবার দিয়ে কাঁকড়া উৎপাদন বাংলাদেশের উপকূলীয় মৎস্য চাষে মাইলফলক হয়ে থাকবে। তিনি উদ্যোক্তাদের প্রযুক্তি সম্প্রসারণে এগিয়ে আসার অনুরোধ করেন।

অনুষ্ঠানে শতাধিক মৎস্যচাষী, সুফলভোগী চাষীসহ গণ্যমান্যব্যক্তিবর্গ অংশগ্রহণকরেন। পরে মহাপরিচালক ও অন্যান্যরা চাষীদের দ্বারা কাঁকড়া আহরণ কার্যক্রম প্রত্যক্ষ করেন।

মানবকণ্ঠ/এসএ


poisha bazar