চাকরি চেয়ে বিক্ষোভ, ১২ ঘণ্টা ধরে অবরুদ্ধ রাবি উপাচার্য


- প্রতিনিধি, দৈনিক মানবকণ্ঠ
- ১২ জানুয়ারি ২০২১, ১০:০২
১৯৭৩-এর অ্যাক্ট সমুন্নত রাখতে না পারার অভিযোগ এবং চাকরির দাবিতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক এম আব্দুস সোবহানকে অবরুদ্ধ করে রেখেছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের বর্তমান ও সাবেক নেতাকর্মীরা। চাকরি প্রত্যাশী ও ছাত্রলীগের এই নেতাকর্মীদের দ্বারা ১২ ঘণ্টা ধরে অবরুদ্ধ রয়েছেন উপাচার্য। সোমবার রাত ৯টা থেকে এ প্রতিবেদন লেখা (সকাল ৯টা) পর্যন্ত নিজ বাসভবনে অবরুদ্ধ ভিসি। প্রধান ফটকে ঝুলছে তালা।
এর আগে উপাচার্যের সাথে থাকা দুই উপ-উপাচার্য ও প্রক্টরকে রাত ৩টা পর্যন্ত অবরুদ্ধ রাখার পর তাদের তিনজনকে যেতে দেয় বিক্ষোভকারীরা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সোমবার দুপুরে রেজিস্ট্রার দপ্তরের এডহকে জালাল নামের একজন প্রতিবন্ধীর চাকরি নিশ্চিত হলে সন্ধ্যার দিকে অন্য চাকরি প্রত্যাশীরা উপাচার্য ভবনের সামনে জড়ো হন। কিছুক্ষণ অবস্থানের পরে শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি গোলাম কিবরিয়ার নেতৃত্বে ছয় জনের একটি দল উপাচার্যের সঙ্গে দেখা করেন। উপাচার্য তাদের চাকরি নিশ্চিতের বিষয়ে আশ্বস্ত না করলে ছাত্রলীগের সাবেক ও বর্তমান কমিটির নেতাকর্মীরা এসে উপাচার্যের ভবনের প্রধান ফটকে তালা ঝুলিয়ে দেন।
এ বিষয়ে রাবি শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি গোলাম কিবরিয়া গতকাল রাত জানান ‘আমরা জানতে পেরেছি সব ধরনের নিয়োগ বাতিল রাখার নির্দেশনা থাকা সত্ত্বেও আজ এডহকে একজনের নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের কেন চাকরি হচ্ছে না। সেটি জানতেই নেতাকর্মীরা গিয়েছিলেন।’
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক লুৎফর রহমান জানান, উপাচার্যের বাসভবনে অবরুদ্ধ অবস্থায় জানতে পারি বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক আখতার ফারুক মারা গেছেন। তখন রাত ৩ টা বাজে। এ সময় উপাচার্যের ভবনের সামনে থাকা আন্দোলনকারী ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের বিষয়টি জানিয়ে অনুরোধ করলে আমাকে যেতে দেয়।
তিনি জানিয়েছেন, অবরোধকারী সকলে চাকরিপ্রত্যাশী। মূলত চাকরির জন্যই তারা অবরুদ্ধ করে রেখেছে। তবে বর্তমানে রাবিতে নিয়োগ প্রদানে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নিষেধাজ্ঞা আছে। যদিও আজ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে এক চিঠির প্রেক্ষিতে একজন প্রতিবন্ধী চাকরি প্রার্থীকে বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকরি দেওয়া হয়েছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপাচার্যের বাসভবনের প্রধান ফটকে তালা ঝুলছে। ছাত্রলীগের চাকরি প্রত্যাশীরা উপাচার্যের বাসভবনের প্রধান ফটকে তালা দিয়ে তার সামনেই অবস্থান করছেন।
জানতে চাইলে উপাচার্য অধ্যাপক এম আব্দুস সোবহান বলেন, উপ-উপাচার্য আনন্দ কুমার সাহা, চৌধুরী মোহম্মদ যাকারিযা ও প্রক্টর অধ্যাপক লুৎফর রহমানসহ আমি রাত ৩টা পর্যন্ত নিজ বাসভবনে অবরুদ্ধ থাকা অবস্থায় ছাত্রলীগের আন্দোলনকারীদের কাছে অনুরোধ করলে তারা দুই উপ-উপাচার্য ও প্রক্টরকে রাত সাড়ে ৩ টার দিকে অবরুদ্ধ থেকে যেতে দেয়। তবে তারা এখন পর্যন্ত আমাকে অবরুদ্ধ করে রেখেছে। উপাচার্য ভবনের প্রধান ফটকে এখনও তালা দিয়ে রাখছে।
অবরুদ্ধ করার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী কার্যালয় থেকে একটি চিঠি দেওয়া হয়েছে একজন প্রতিবন্ধী ছেলেকে চাকরি দেওয়ার জন্য। যেহেতু নিয়োগে বন্ধে শিক্ষামন্ত্রণালয়ের নির্দেশ আছে। তাই আমি বিষয়টি সচিবকে জানিয়েছি, তিনি নিয়োগ দিতে বলেছেন এবং নিয়োগ দিয়েছি।’
তিনি বলেন, ‘এর প্রেক্ষিতে সন্ধ্যার দিকে তারা এসে চাকরির দাবি করেছে। কিন্তু আমি জানিয়েছি, সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী নিয়োগ বাতিল রাখা হয়েছে। এখন আমি কোনো নিয়োগ দিতে পারব না।’
আরো সংবাদ
