সংগ্রামের দিনে পত্রিকা-দুধ বিক্রির অতীত

বাসচালকের ছেলে সুখবিন্দর হিমাচলের মুখ্যমন্ত্রী


  • প্রতিনিধি, দৈনিক মানবকণ্ঠ
  • ১১ ডিসেম্বর ২০২২, ১৬:৫৬

ভারতীয় রাজনীতিতে আরও একটি মাইলফলক পুঁতে আজ হিমাচল প্রদেশে মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়েছেন সুখবিন্দর সিং শুকু। এমনিতে তাঁর শপথ গ্রহণে নতুনত্ব কিছু নেই। তবে যে বিষয়টা চমক সৃষ্টি করেছে তা হচ্ছে—সুখবিন্দরের কোনও পলিটিক্যাল ব্যাকগ্রাউন্ড নেই।

এক ছাপোষা পরিবার থেকে সিঁড়ি বেয়ে মুখ্যমন্ত্রী হতে পেরেছেন তিনি। তাঁর বাবা রাশিল সিং হিমাচল রোড ট্রান্সপোর্ট কর্পোরেশনের বাসের চালক ছিলেন। মা সংসার ধেই ছিলেনএকজন নিছক গৃহিনী। এমন পরিবারের সুখবিন্দর হিমাচল প্রদেশের বাব্রন জেলা থেকে সিমলায় পড়তে এসে মাল রোডে বসে পত্রিকা ও দুধ বিক্রি করেছেন। কলেজে পড়ার সময় থেকে রাজনীতিতে হাতেখড়ি। কংগ্রেসের ছাত্র সংগঠন এনএসইউআই,পরে যুব কংগ্রেস,প্রদেশ কংগ্রেসে বিভিন্ন দায়িত্ব পালন করেছেন।

তবে মুখ্যমন্ত্রী হতে তাঁর পথ মসৃণ ছিল না। তিনজন প্রতিদ্বন্দ্বীর মধ্যে অন্যতম ছিলেন হিমাচল প্রদেশের ছয়বারের মুখ্যমন্ত্রী বীরভদ্র সিংয়ের স্ত্রী প্রতিভা সিং। কিন্তু কংগ্রেস টিকিটে নির্বাচিত ৪০ জন বিধায়কের মধ্যে ২১ জনের পছন্দ ছিলেন ৫৮ বছর বয়সী সুখবিন্দর। হাইকমাণ্ডের পছন্দকে মত দিয়েছিলেন ১২ জন। প্রতিভা সিংকে সমর্থন করেছিলেন মাত্র ৭ বিধায়ক। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, হিমাচলের মাটিতে বীরভদ্রের পরিবারকে টেক্কা দেওয়া চাট্টিখানি কথা নয়। প্রতিভা সিং শুধু বীরভদ্রের স্ত্রী নন। তিনি প্রদেশ কংগ্রেস সভানেত্রী এবং লোকসভা সাংসদও। তাঁর ছেলে বিক্রমাদিত্য সিং সিমলা (গ্রামীণ) কেন্দ্রের বিধায়ক। প্রতিভাকে মুখ্যমন্ত্রী করার দাবিতে হাজার হাজার সমর্থক সড়কে বেরিয়ে শ্লোগান দিয়েছেন। কিন্তু বাজি মেরেছেন সুখবিন্দর সিং।

তাঁর সঙ্গে আজ উপ মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়েছেন মনোজ অগ্নিহোত্রী। তিনি একসময়ে সাংবাদিকতা করতেন। রাজনীতি করে বিদায়ী বিধানসভায় বিরোধী দলনেতা হয়ে যান। তাই আজ এই দুই রাজনীতিকের এমন অভিষেককে সাধারণ মানুষের জয় হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। কংগ্রেস রাজনীতিতে সাধারণত পলিটিক্যাল ব্যাকগ্রাউন্ড থাকা নেতা-নেত্রীদেরই অগ্রাধিকার দেওয়ার রেওয়াজ রয়েছে। এই দৃষ্টিকোণ থেকে সুখবিন্দর ব্যতিক্রম বলা যায়। স্বভাবতই জনমানসে এর প্রভাব পড়েছে। আজ শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে এর প্রতিফলন ঘটেছে।

অনুষ্ঠানের সাক্ষী হতে আজ সিমলা উড়ে যান এআইসিসি মল্লিকার্জুন খার্গে,প্রাক্তন সভাপতি রাহুল গান্ধী,তাঁর বোন প্রিয়ঙ্কা গান্ধী প্রমুখ। উদ্দীপনার অভাব ছিল না। একটি হিন্দি পত্রিকা লিখেছে—বাসচালক কা বেটে কী পাছ হিমাচল কা স্টিয়ারিং।

মানবকণ্ঠ/এআই


poisha bazar