মুখ্যমন্ত্রীর পদ নিয়ে টানাটানি

হিমাচলে জিতেও স্বস্তি নেই কংগ্রেসের 

গুজরাটে শপথ সোমবার 


  • প্রতিনিধি, দৈনিক মানবকণ্ঠ
  • ১০ ডিসেম্বর ২০২২, ১৭:২০,  আপডেট: ১০ ডিসেম্বর ২০২২, ১৭:২৯

ভারতের দু’টি রাজ্যে অনুষ্ঠিত বিধানসভা নির্বাচনে হিমাচল প্রদেশে কংগ্রেস নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে সরকার গঠনের সংখ্যা পেয়েছে। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী কে হবেন তা নিয়ে দলের মধ্যে তুমুল টানাপোড়েন শুরু হয়েছে। ফলে গুজরাটে বিজেপি শপথগ্রহণের দিনক্ষণ চূড়ান্ত করে নিলেও হিমাচল প্রদেশে জটিল পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে কংগ্রেসের তিন পর্যবেক্ষকের উপস্থিতিতে শুক্রবার দুই দফায় বিধান পরিষদীয় দলের বৈঠক ডাকা হলেও তা ভেস্তে যায়। রাতে বৈঠক ডেকে এক লাইনের একটি প্রস্তাব গ্রহণ করে মুখ্যমন্ত্রী বাছাইয়ের কর্তৃত্ব সর্বভারতীয় কংগ্রেস সভাপতিকে (এআইসিসি) দেওয়া হয়েছে। 

হিমালয় পর্বতের পাদদেশে স্থিত বরফাবৃত পাহাড়ি রাজ্যটিতে বিধায়ক সংখ্যা হচ্ছে ৬৮। কংগ্রেস ৪০ টি আসন পেয়েছে। বিজেপি জিতেছে ২৫ আসনে। তিন আসনে নির্দল জয়ী হয়েছেন। কিন্তু কংগ্রেসে মুখ্যমন্ত্রীত্বের দাবিদার হয়ে গেছেন তিনজন। তাঁরা হচ্ছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভানেত্রী প্রতিভা সিং, প্রচার কমিটির প্রধান সুখবিন্দর সিং শুকু এবং বিদায়ী বিরোধী দলনেতা মুকেশ অগ্নিহোত্রী। প্রতিভা সিং হচ্ছেন হিমাচল প্রদেশের প্রয়াত উচ্চ মাপের কংগ্রেস নেতা বীরভদ্র সিংয়ের বিধবা স্ত্রী। তিনি প্রদেশ কংগ্রেস প্রধান ছাড়াও মাণ্ডি লোকসভা আসনের সাংসদও। এই তিনজনের মধ্যে মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে বিধায়করা কাকে পছন্দ করছেন তা পরখ করতে এবং পরম্পরা মেনেই গতকাল সিমলা পৌঁছান কংগ্রেসের তিন পর্যবেক্ষক ভূপেশ বাঘেল,ভূপিন্দর সিং হুডা এবং রাজীব শুক্ল। এই তিনজন রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করে সরকার গঠনের দাবি রেখেছেন। পরে এক এক করে সব বিধায়কের মত নিয়ে পর্যবেক্ষকরা সিমলা ছেড়েছেন। তারা এআইসিসি সভাপতি মল্লিকার্জুন খার্গের কাছে রিপোর্ট জমা করবেন। আগামী দু-তিনদিনের মধ্যে হয়তো কংগ্রেস মুখ্যমন্ত্রীর ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে। এতে জটিলতার অবসান হবে, না আরও বাড়বে তা সরকারের ভবিষ্যৎ বলবে।

তবে ভোটের ফলাফল নিয়ে হিমাচল প্রদেশ বিজেপিতেও স্বস্তি নেই। গেরুয়া দলটিকে বেশ শৃঙ্খল বলা হলেও হিমাচলে দলের মধ্যেই লবিবাজি ও ল্যাং মারামারির কারণে আসন সংখ্যা কমেছে বলে দলেরই একটি অংশের মত। যে কারণে গুজরাটে ‘মোদি ম্যাজিক’ কাজ করলেও হিমাচলে ব্যর্থ হয়েছে। খোদ কেন্দ্রীয় তথ্য ও সম্প্রচার,ক্রীড়া মন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুরের সংসদীয় কেন্দ্র হামিরপুরের পাঁচ বিধানসভার সবক’টিতেই বিজেপি প্রার্থীরা হেরেছেন। গত বছর এই অনুরাগ ঠাকুরই দিল্লি বিধানসভা নির্বাচনী প্রচারে একটি জনসভায় বলেছিলেন, “দেশ কী গদ্দারো কো,গোলী মারো শালো কো (দেশদ্রোহী শ্যালাদের গুলি মেরে নিঃশেষ করো)’’। এটা যে মুসলিমদের উদ্দেশ্য করেই তিনি বলেছিলেন তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। এই অনুরাগ ঠাকুরের বাবা প্রেমকুমার ধূমল হিমাচলের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন। বয়স ৭৮ হলেও তিনি এখনও মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার স্বপ্ন দেখেন। তবে শুধু অনুরাগ ঠাকুর নন বরং বিজেপি সভাপতি জগৎ প্রকাশ নাড্ডার গৃহজেলা বিলাসপুরের তিন আসনে দল কান ঘেঁষে জয়ী হয়েছে। একটি আসনে বিজেপি ও কংগ্রেস প্রার্থীর জয়ের ব্যবধান মাত্র ৩৯৯। হিমাচলে নাড্ডা ও ধূমলদের মধ্যে লবিকেন্দ্রিক লড়াই সর্বজনবিদিত। 

অন্যদিকে,গুজরাটে আজ বিধান পরিষদীয় দলের বৈঠক রয়েছে। তবে বৈঠক প্রতীকী। ওই রাজ্যে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি যাকে পছন্দ করবেন,তিনিই মুখ্যমন্ত্রী হবেন। বিদায়ী মুখ্যমন্ত্রী ভূপেন্দ্র পাটেলই ফের মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সোমবার শপথ গ্রহণ হতে পারে। 

মানবকণ্ঠ/এআই


poisha bazar