রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এবং চীন-তাইয়ওয়ান অস্থিরতা
হুমকির মুখে আমদানি-রপ্তানি

- ছলিম উল্লাহ মেজবাহ
- ১৯ মার্চ ২০২৩, ১৮:৫০
সৌদি আরবের সাবেক রাষ্ট্রদূত ও প্রধান বিরোধীদলীয় নেতা বেগম রওশন এরশাদের রাজনৈতিক সচিব গোলাম মসীহ্ বলেন, এই মুহূর্তে জাতির অর্থনৈতিক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে, বিশেষ করে রাশিয়া, ইউক্রেন দীর্ঘায়িত যুদ্ধ এবং আগামীতে চীন-তাইয়ওয়ান অস্থিরতা বিশ্বব্যাপী মন্দা ঢেকে আনবে। যার ক্ষতি দেশে আমদানি ও রপ্তানি নির্ভরশীল বাংলাদেশ হুমকির সম্মুখীন হবে। তিনি বলেন, কারণ আমাদের অর্থনৈতিক প্রধান পণ্য গার্মেন্টসের চাহিদা কমে আসবে। যার দরুন বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে কমে আসবে। একই সাথে যেহেতু বাংলাদেশ তৈল, গ্যাস, চিনি, গম, বৈজ্যতেল আমদানি করতে হয়। এই সকল পণ্য আন্তর্জাতিক বাজারে ঊর্ধ্বগতি থাকবে বলে মনে হচ্ছে। যার প্রভাব আমাদের পণ্যবাজারে ঊর্ধ্বগতির দাম দেখা দেবে। ফলে বেশি প্রভাব পড়বে সাধারন মানুষের জীবন যাত্রার ব্যয় বৃদ্ধির উপরে। সরকারের উচিত অতি সত্তর এই সকল হুমকি চিবোচনা করতে দ্রুত বাস্তব পরিকল্পকনা গ্রহণ করতে হবে।
গতকাল শনিবার সকালে রাজধানীর গুলশানের নিজ বাসভবনে দৈনিক মানবকণ্ঠকে দেয়া একান্ত সাক্ষাতে এসব কথা বলেন গোলাম মসীহ্। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়সহ বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, শিল্প মন্ত্রণালয় ও বৈদিশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় সতর্কতার সঙ্গে সক্রিয় ভূমিকা পালন করতে হবে। কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় গত ১০ বছর চেষ্টা করেও মালয়েশিয়ার মতো একটি সুন্দর শ্রমবাজার এখনো সুবিন্যস্ত করতে পারেনি। মন্ত্রণালয় সঠিকভাবে সক্রিয় ভূমিকা রাখলে মালয়েশিয়া ১০ লাখ শ্রমিকের কর্মসংস্থান সৃষ্টির করা সম্ভব ছিল।
জাতীয় পার্টির দশম জাতীয় সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির সদস্য সচিব গোলাম মসীহ্ বলেন, রোহিঙ্গা শরণার্থী বিগত ৫ বছর যাবত ১২ লাখ বাংলাদেশে অবস্থান করছে। প্রধানমন্ত্রীর মানবিক কারণে এসব শরণার্থী আশ্রয় নিয়েছে। যা পৃথিবীর সকল দেশ ভূয়সী প্রশংসা করেছেন। প্রধানমন্ত্রী শরণার্থীদের জন্য বাসস্থান, শিক্ষা, চিকিৎসা, ও খাদ্য ব্যবস্থা আভ্যন্তরীণ ও বৈদেশিক সাহায্য নিয়ে ব্যবস্থা করেছেন। কিন্তু এটা স্থায়ী সমাধান না। তাদেরকে অবশ্যই মিয়ানমারে ফিরে যেতে হবে। যাতে তাহারা মানবিক জীবন এবং সুন্দর ভবিষ্যৎ নিয়ে বসবাস করতে পারে। এই সমস্যা সমাধানের জন্য আমাদের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ভূমিকা আরো জোরদার করতে হবে। কূটনৈতিক পদক্ষেপ জোরদার করতে হবে।
আরেক প্রশ্নের জবাবে এই কূটনৈতিক বলেন, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আমাদের বিদেশি অবস্থিত দূতাবাসগুলোকে অর্থনৈতিক কূটনৈতিক শক্ত প্রদক্ষেপ গ্রহণ করে বিদেশি বিনিায়োগ কমপক্ষে ২৬ বিলিয়ন ডলার ২০২৮ সালের মধ্যে ব্যবস্থা করতে হবে। ৩০ বিলিয়ন ডলারের লক্ষ্যস্থির করে ২০২৮ সালের মধ্যে ব্যবস্থা করতে হবে। এই বিষয়ে বিটা বাংলাদেশ ইনভেস্টমেন্ট বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, বিআইডিএ এবং বেপজা আরো সক্রিয় ভূমিকা পালন করতে হবে। আমাদের বৈদিশিক মুদ্রা রিজার্ভ বাড়াতে হলে হুন্ডির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। এ বিষয়ে আমাদের অর্থ মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ ব্যাংকের আরো দৃঢ়তার সাথে কার্যকর ভূমিকা রাখতে হবে।
জাতীয় পার্টির সাবেক প্রেসিডিয়াম সদস্য গোলাম মসীহ্ বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশের বাণিজ্য ঘাটতি বছরে প্রায় ২৪ বিলিয়ন ডলার। যাহা আমাদের মতো ঘনবসতি দেশের জন্য বিরাট হুমকির। তাই আমাদের শিল্প, বাণিজ্য ও কৃষি মন্ত্রণালয়ের নতুন নতুন রপ্তানিযোগ্য বিদেশে রপ্তানি করে এ ঘাটতি কমিয়ে আনতে হবে। এ ঘাটতি পূরণে বাংলাদেশ পোশাকশিল্প উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করছে। যা ধন্যবাদ পাওয়ার যোগ্য পোশাকশিল্প রপ্তানি খাত। তিনি বলেন, একই সঙ্গে প্রশংসা পাওয়ার যোগ্য শিল্প ও শ্রমিকরা। সাবেক রাষ্ট্রপ্রতি হুসেইন মুহম্মদের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত পাওয়া গোলাম মসীহ্ বলেন, বর্তমানে বিদেশে অদক্ষ শ্রমিকদের চাহিদা অনেকাংশে কমে গেছে। অন্যদিকে দক্ষ শ্রমিকদের চাহিদা দিন দিন বাড়ছে। তাই আমাদের এই লক্ষ্যে শিক্ষা কর্মসংস্থান ও বৈদেশিক মন্ত্রণালয় উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করতে হবে। এই লক্ষ্যে জোর ভূমিকা পালন করতে হবে।
সংসদের প্রধান বিরোধীদলীয় নেতা বেগম রওশন এরশাদের ঘনিষ্ঠ রাজনৈতিক সচিব গোলাম মসীহ্ বলেন, বিশেষ করে কারিগরি শিক্ষা, বৃত্তিমূলক প্রদক্ষেপ গ্রহণ করা উচিত। বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা এখন পৃথিবীর সব চাইতে দূষিত শহরে পরিচিত পেয়েছে। ইহা আমাদের জন্য কাম্য নয়। স্বাস্থ্য বিশেষ করে শিশুদের স্বাস্থ্য ক্ষতি হচ্ছে। দৃষ্টিজনিত রোগের কারণে হাজার হাজার কোটি টাকা চিকিৎসা খাতে ব্যয় করতে হচ্ছে। পরিবেশ মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে আরো সচেতন হবে। এবং দেশব্যাপী দূষিত হওয়ার কারণে চিহ্নিত তবে তার বিরুদ্ধে পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।
মানবকণ্ঠ/এসআরএস


